জিন সাপের কামড়: গ্রামবাসীর আতঙ্ক : খাসি জবাই

জিন সাপের কামড়- ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় জিন সাপের কামড় আতঙ্কে রয়েছে গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর দাবি, গত তিন দিনে প্রায় ৭০ জনকে জিন সাপে কামড়িয়েছে। উপজেলার পৌরসভাধীন চটকাবাড়ীয়া গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, জিন সাপের কামড় থেকে রক্ষা পেতে কবিরাজের পরামর্শে খাসি জবাই করে মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জবাইকৃত ছাগলের হাড় ও রক্ত পুতে দেওয়া হয়েছে গ্রামের মাঝ খানে। ওই গ্রামের সন্তান ও হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র শাহিনূর রহমান রিন্টু জানান, গত তিন দিনে গ্রামের প্রায় ৭০ জন নারী ও পুরুষকে জিন সাপ কামড়িয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। জিন সাপের কামড়ে অসুস্থ ওই গ্রামের গ্রাম পুলিশ সদস্য আত্তাব হোসেনের ছেলে লিটন জানান, গত ১১ জুলাই সন্ধ্যায় হঠাৎ তার হাতে কামড়ের দাগ দেখা যায়। এ সময় ওই অংশে প্রচণ্ড জ্বালা যন্ত্রনাসহ মাথা ঘোরা শুরু হয়। কবিরাজের কাছে গেলে কবিরাজ ঝাঁড় ফুক করে জিন সাপে কামড়েছে বলে জানায়।

সাপের কামড়ের শিকার ওই গ্রামের স্বপন, লিয়ন, রান্নু, টনি, মিরাজ, মোমিন, উকিল, ইউসুফ, উসমান, স্বপ্না খাতুন ও জুলেখা খাতুনসহ সবারই একই বক্তব্য।

বিরামপুর গ্রামের কবিরাজ মহত আলীর দাবি, ওই গ্রামে একটি পৌড় নিমগাছ ছিল। যেটির পরিচর্যা করতেন ঐ গ্রামের শতবর্ষী বয়সী বৃদ্ধ হাতেম আলী। সেখানে ঈদের পর একজন ব্যক্তি একটি মহিষ জবাই করায় ক্ষিপ্ত হয়ে জিন সাপ রুপে গ্রামবাসীর উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। খাসি জবাই করে মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে জবাইকৃত খাসির হাড় ও রক্ত গ্রামের মাঝখানে পুতে দিলে জিন সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাবে গ্রামবাসী।

এ দিকে ওই গ্রামের মুরব্বী খলিলুর রহমান জানান, কবিরাজের পরামর্শে শনিবার খাসি জবাই করে মিসকিনদের মাঝে খাবার বিলিয়ে দেওয়ার পর থেকেই বন্ধ হয়েছে জিন সাপের কামড়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে একটি শিশু ভর্তি হয়েছিল তার কোথাও কোনো কামড়ানোর চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। এটিকে মাস সাইকোজেনিক ইলনেস বা গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ বলা হয়। আসলে জিন সাপ বলে কিছ্ নেই। আতঙ্কে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।